425Views 0Comments
ঢাবির রেজিষ্টার বিল্ডিংয়ের কথা উঠলেই প্রহসনের সীমানা থাকে না, কারণ সেখানে কোনো কাজ হয় না। ছাত্রছাত্রীরা দিনের পর দিন সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন থেকে যায় কাজের জন্য, কিন্তু লঞ্চের পর আসেন, আগামীকাল আসেন, বা লোক আসতে দেরি হচ্ছে সবুর করেন, এসব ট্যাগলাইনেই সীমাবদ্ধ এই প্রহসনের ভবন। আর সিস্টেমটাও তেমন, একটা কাজ অনলাইনে সম্পূর্ন করা যায় না, অর্ধেক করে লাইনে দাড়াতে হয় রেজিষ্টার বিল্ডিংয়ে, যেন এখনও ঢাবি রয়েছে সেই ভিক্টোরিয়ান আমলে।
এসব নিয়েই গত দুইদিন আগে ভিডিও করেন সাকিব বিন রশিদ, বর্ণনা করেন তার একটি ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে গিয়ে কিভাবে দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘন্টা দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি, কিভাবে রেজিষ্টার বিল্ডিং থেকে ব্যাংক, ব্যাংক থেকে রেজিষ্টার বিল্ডিং, আবার হল, আবার রেজিষ্টার বিল্ডিং এভাবেই দিনানিপাত হয় ঢাবির ছাত্রছাত্রীদের, যেখানে কর্তৃপক্ষ থাকে সর্বদা নীরব।
তবে, এবার ঘটনায় একটু ভিন্নতা, রাত পোহাতেই দেখা যায় ভিডিও ভাইরাল। সাকিব বিন রশিদ রেজিস্টারের কল পান যে তাকে ভিসির সাথে দেখা করানো হবে। বিভিন্ন ধরনের উদ্ভট মেসেজ আর আপডেটে ঘাবড়ে যান তিনি, নিশ্চিত থাকেন ভিডিওটা ডিলিট করতে হবে খুব শিগগির।
First Video – Facebook
যখন সাকিব বিন রশিদ অবশেষে দেখা করেন, দেখতে পান সব ডিপার্টমেন্টে হেড রাও যোগ দিচ্ছে মিটিংয়ে। মুহূর্তে পাশার দান বদলের মত আশ্চর্যকর ঘটনা হয়ে দাড়ায় যখন সবাই মিলে তার ভিডিও দেখে, এবং আলোচনা করে কি কি ধরনের সমস্যায় তিনি ভুগেছেন বা অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা কি কি সমস্যা মোকাবেলা করে এই রেজিষ্টার বিল্ডিংয়ে।
ঘন্টাখানেক আলোচনা এবং বিভিন্ন জবাবদিহিতা চলে; হলের ক্যাশিয়ারকে ডাক দিয়ে কেন অতিরিক্ত টাকা নেয়া হলো থেকে শুরু করে রেজিষ্টার বিল্ডিংয়ে কেন একটা ট্রান্সক্রিপ্ট অনলাইনে দেওয়া যায় না সবরকমের প্রশ্নের পালা চলে মিটিংয়ে। এমনকিছু ঢাবিতে অন্তত খুবই নতুন, এবং প্রশংসনীয়।
এই ঘটনার কৃতিত্ব যেমন সাকিব বিন রশিদের যেহেতু তিনি ভিডিও টা করেছিলেন, তেমনি সাদেকা হালিম ম্যামের যিনি ঢাবির ভিসিকে রিকোয়েস্ট করেছিলেন ভিডিও টা দেখার, আর সর্বোপরি ঢাবির নব্য নিযুক্ত ভিসির। ২৯তম উপাচার্য হিসেবে এই অক্টোবরেই যোগদান করেন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ঢাবির আরেক শিক্ষক আসিফ ইমতিয়াজের প্রশ্নে তিনি বলেন, “প্রতিদিন রাতে আমি অন্তত ঘণ্টা দুয়েক এখনও গবেষণার কাজ করি, পড়াশোনা করি।” সত্যি এমন ভিসি দেখেই বোধহয় এমন প্রশংসনীয় ঘটনা দেখা গেল ঢাবিতে।
Second Video – Facebook
তবে কি বদলে যাচ্ছে রেজিষ্টার বিল্ডিং? প্রহসনের পালা আর ছাত্রছাত্রীদের অবাঞ্ছিত সমস্যার মোকাবেলার দিন কি শেষ? সাকিব বিন রশিদ তার আপডেট ভিডিওতে ছাত্রছাত্রীদের আহ্বান জানান সমস্যাগুলোর ব্যাপারে আরও সোচ্চার হতে। হতেও তো পারে, এই শেওলা পরা বিষন্ন ঢাবি একদিন আবার জেগে উঠবে সব জঞ্জাল বেড়িয়ে। তবে তার জন্য দরকার সবার সহযোগিতা।